কেন সফল হতে চান?
ক্যারিয়ার জীবনে কে না চায় সফল হতে। সবাই সবার নিজ অবস্থান থেকে সফল হওয়ার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। সবার মনে একই প্রশ্ন কবে সাফল্যের দেখা মিলবে। আপনি সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছাবেন তখনই যখন আপনি আপনার কাজকে ভালোবাসবেন।
আরও পড়ুনঃ কর্মক্ষেত্রে সফলতার উপায় গুলো কি কি?
আপনি সফল হবেন তখন যখন আপনি আপনার কাজকে পেশা হিসেবে না নিয়ে ভালোলাগা হিসেবে নেবেন। সাফল্য লাভের জন্য আপনার কঠোর পরিশ্রম এবং প্রচন্ড ইচ্ছা শক্তি প্রয়োজন।
কোন কাজের সাময়িক ব্যর্থতা মানে এই না যে, আপনি হতাশ হবেন। আপনি আপনি সৃষ্টির সেরা। আপনাকে হতাশ হওয়া মানাবে না। আপনার ভেতরে থাকা সুপ্ত প্রতিভা কে জাগ্রত করতে হবে।
আপনার ইচ্ছাশক্তি যদি প্রখর থাকে আপনিও হতে পারেন জ্ঞানী-গুণী ধনী আলোচিত উজ্জ্বল নক্ষত্র। আপনার ইচ্ছাশক্তি আপনাকে করবে বিখ্যাত, জননন্দিত, বিশ্ববরেণ্য।
জীবনে সফল বা জয়ী হওয়ার কৌশল-
ইচ্ছাশক্তি থাকলে আপনিও হতে পারেন আলোকিত মানুষদের একজন। এই আর্টিকেলের জীবনে জয়ী হওয়ার বা সাফল্য সম্বন্ধে ৮ টি কৌশল আলোচনা করবো যা আপনার জীবনে সাফল্য অর্জন করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
১। নিজের উন্নতির জন্য “স্বার্থপর” হনঃ
স্বার্থপর হওয়া বলতে নিজের প্রতি বেশি যত্নবান হওয়া। আমরা অনেকেই মনে করে আমার কাজ হল সবাই কে খুশি রাখা। যে একজন মানুষের পক্ষে কখনই সম্ভব না। আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে যা মেনে নেয়ার মানসিকতা থাকতে হবে।
এ জন্য সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য কখনও কখনও আপনাকে স্বার্থপর হতে হবে।
সঠিক ভাবে বেড়ে ওঠার জন্য সকল চিন্তা ও মনোযোগ আপনার দিকে দিতে হবে। হ্যাঁ, আপনি ঠিকই পড়েছেন। এ জীবনে যদি আপনি নিজের সম্পর্কে আগে চিন্তা না করেন তবে আপনি আপনার অস্তিত্ব অর্জন করতে পারবেন না।
আরও পড়ুনঃ সফল ক্যারিয়ার গড়ার ৫ টি টিপস
সফল হওয়ার জন্য স-বৃদ্ধি সত্যিই খুব খুব গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনার সমস্ত ইচ্ছাগুলো মানুষের মতামতের ওপর ভিত্তি করে হয়ে থাকে।
তবে আপনার সত্যি স্বার্থপর হওয়া দরকার কারণ আপনি যদি অন্যকে সন্তুষ্ট করতে সময় ব্যয় করেন তবে আপনার পক্ষে সফল হওয়া খুব কঠিন হবে। তাই আপনাকে হতে হবে স্বার্থপর।
২। ইতিবাচক হিংসা করতে শিখুনঃ
আপনাকে সফল হওয়ার জন্য ইতিবাচক হিংসা করতে শিখতে হবে। কিভাবে করবেন?এই বিশ্বের প্রতিটি ধাপে রয়েছে প্রতিযোগিতা। সুতরাং আপনাকে সর্বদা অন্যের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে।
ইতিবাচক ঈর্ষা আপনাকে অনুপ্রেরণা জাগাতে সাহায্য করবে।
উদাহরণস্বরূপ ধরুন, আপনার একটি বন্ধু সদ্য নতুন গাড়ি কিনেছেন। আপনি তার প্রতি ঈর্ষা বোধ করতে পারেন, তবে এই ঈর্ষা যদি নেতিবাচক হয় তবে এটি ভবিষ্যতে আপনার আফসোস বা হতাশা তৈরি করতে পারে।
আর আপনি যদি ইতিবাচক উপায়ে ঈর্ষান্বিত হন তবে গাড়িটি কেনার জন্য আপনিও অনুপ্রেরণা ও সংকল্পবদ্ধ হয়ে যাবেন। মনে রাখবেন ইতিবাচক উপায় হিংসা করলে সমস্ত স্বপ্নই অর্জন করা যায়।
৩। সবকিছুকে আজকের বিষয় ভাবুনঃ

ভবিষ্যৎ বলে কিছু নেই। সাফল্যের জন্য আপনাকে আজি কাজ করতে হবে। আর যদি ভালো করে কাজ করেন তবে আপনার জন্য অপেক্ষা করছে একটি দারুণ ভবিষ্য।
আর যদি আজকের দিনটিতে আপনি নিউ ভালো করে কাজ না করেন তাহলে বলবেন যে আমার অতীত তো ভালো কাটে নাই। সুতরাং প্রতিদিন নিজেকে ১% হলেও বদলে ফেলুন।
৪। হ্যাঁ-না বলুন চিন্তাভাবনা করেঃ
সফল ব্যক্তিরা হ্যাঁ-না বলেন ভেবেচিন্তে। বুদ্ধিবৃত্তিক কিংবা সৃজনশীল যে কোনো সুযোগ মিললে হ্যাঁ বলুন। নিয়মিত ধ্যান করুন যা আপনার ভাবনা শক্তি সৃজনশীল মনের জোর বাড়াতে সাহায্য করবে।
৫। বহুমাত্রিক সাফল্যের চেষ্টা করুনঃ
মার্কিন ধনকুবের ওয়ারেন বাফেট তরুণদের এক জায়গায় বিনিয়োগ করতে পরামর্শ দেন না।
তিনি অনেক জায়গায় বিনিয়োগের পরামর্শ দেন যেন একটি বিনিয়োগ ব্যর্থ হলেও অন্য জায়গায় সামনে এগোনোর সুযোগ থাকে।
একটি বিষয়ের সাফল্য এলে সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য অন্য বিষয়ে মন সংযোগ করুন। আমেরিকার মিলিয়নরা কমপক্ষে পাঁচটি বিভিন্ন রকমের সূত্র থেকে অর্থ আয় করে থাকে।
সুতরাং নিজেকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বহুমাত্রিক সাফল্যের চেষ্টা করতে শিখুন।
৭। শরীর চর্চার উপর জোর দিনঃ
কোন কাজ করার জন্য কোন শক্তি আগে জরুরী? মানসিক না শারারিকি? বিশেষজ্ঞদের মতে, কোন কাজে মন দেয়ার জন্য মানুষের মানসিক ইচ্ছা শক্তি আগে কাজ করে।
আপনি যদি বলেন আমি কাজ টি করতে পারব তাহলে দেখবেন কাজটি অর্ধেক সম্পন্ন হয়ে গেছে। তবে মন টিক রাখার জন্য অবশ্যই শরীর ও ঠিক রাখতে হবে।
আর শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য নিয়মিত শরীর চর্চা অর্থাৎ ব্যায়াম করতে হবে। সফল ব্যক্তিরা তাদের শত কাজের মদ্ধেও ব্যায়াম করার জন্য সময় ব্যয় করেন। আপনাকে জিমে যেয়ে করতে হবে বিষয় তা এমন না।
সম্ভব হলে সকালে ২০ বা ৩০ মিনিট হাঁটতে পারেন। এমন কি নিজ বাড়িতে অল্প জাইগায় যোগ ব্যায়াম ও করতে পারেন। আর এগুলো করার জন্য ইচ্ছা শক্তিই আসল ভুমিকা পালন করে।
৮। নিজের প্রতি প্রবল আত্মবিশ্বাস রাখাঃ
সাফল্য পাওয়া খুব কঠিন তাদের জন্য যাদের কোন কাজের দক্ষতা নাই বা প্রশিক্ষন নাই।
যদি কাজের প্রতি আগ্রহ না থাকে, নিজে কি করতে ভাল বাসেন, আপনার শক্তিমত্তা ও বুদ্ধিমত্তা যাচাই ক্ষমতা না থাকে তাহলে আত্মবিশ্বাস ধরে রাখা দুরহ বটে।
তাই ইচ্ছা শক্তি ও কাজের মাধ্যমে প্রমাণ করতে হবে কেন আপনি সফল হতে চান। হোক সেটা কারির্যার বা পার্সোনাল জীবনে।
উপসংহারঃ
কথায় আছে,
“পরিশ্রম সাফল্যের চাবিকাঠি”। পরিশ্রম দ্বারা ভাগ্যে চাবিকাঠি পরিবর্তন করা সম্ভব। সফলতার জন্য প্রবল ইচ্ছাশক্তি পরিশ্রম এবং অধ্যাবসায় প্রয়োজন।
তবে সব থেকে বেশি প্রয়োজন নিজের জীবনের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ঠিক করা জরুরী। সে বিষয়ে ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যাওয়া।
যদি ব্লগটি ভাল লাগে তাহলে নিচে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ।
Thanks
খুব সাবলিল এবং প্রাঞ্জল লিখা।
অনেক দূর এগিয়ে যাও????